সংবাদ শিরোনাম
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত মাদক ও ইলেকট্রনিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে ছেলে মেয়েরা মেধা কার্যক্রম থেকে সরে গিয়েছে: খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর নাতি ওস্তাদ আশীষ খাঁ মারা গেছেন আবারও কমলো স্বর্ণের দাম আসছে তীব্র শীত, কমছে তাপমাত্রা সরাইলে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের আনন্দ মিছিল শীত ও শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস চাল আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার রেল যাতায়াত, যানজট ও লোডশেডিং সমস্যা সমাধানের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নাগরিক ফোরামের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত কক্সবাজারে লেফটেন্যান্ট তানজিম হত্যার ঘটনায় সেনাবাহিনীর অভিযানে ৬ জন আটক
সৌন্দর্যের মূর্ত প্রতিক মোহাম্মদ (সা:)

সৌন্দর্যের মূর্ত প্রতিক মোহাম্মদ (সা:)

মুসলিম জাতি কিভাবে জীবন পরিচালনা করবে, কিভাবে উন্নতি সাধন করবে তার জন্য আল্লাহ তায়ালা একটি ফর্মূলা প্রেরন করেছেন, আদর্শ পাঠিয়েছেন। যার অনুস্বরন অনুকরন করে মুসলমানরা নিজেদের জীবন গড়বে,আল্লাহ তায়ালা এ আদর্শ ও নমুনার জন্য শুধু দর্শন-ই দেননি বরং বাস্তব জীবনে তার প্রয়োগ ও রুপায়ন করে দেখানোর জন্য হযরত মোহাম্মদ (সা:) কে প্রেরন করেছেন। মহাগ্রন্থ আল কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, রাসূল (সা:) এর জীবন দর্শনে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ । (সূরা আহযাব আয়াত-২১)
আল্লাহ তায়ালা মোহাম্মদ (সা:) কে এত উত্তম বৈশিষ্ট ও গুনাবলী দিয়েছেন যা গননা করে শেষ করা যাবেনা । সর্বগুনে সেরা ছিলেন, মোহাম্মদ (সা:),হযরত আদম (আ:) এর পর দুনিয়ার বুকে আল্লাহ তায়ালা প্রায় এক লক্ষ মতান্তরে দুই লক্ষপয়গাম্বর প্রেরন করেছেন। প্রত্যেক নবীর জন্য সময় ও কর্মক্ষেত্রের পরিধি ছিল নির্দিষ্ট । আবার একই সময়ে আবির্ভূত হয়েছেন একাধিক নবী। কিন্তু হযরত মোহাম্মদ (সা:)কোন কালে কিংবা কোন দেশের জন্য নির্দিষ্ট হয়ে প্রেরিত হননি বরং কিয়ামত পর্যন্ত তিনি সৃষ্টিকুলের সকল কিছুর নবী। তার পর আর কোনো নবী আসবেনা । আল্লাহ তায়ালা তাকে সর্বগুনে গুনান্বিত করে দুনিয়াতে প্রেরন করেছেন। এজন্য যে কেউ যেন বলতে না পারে যে,তার মধ্যে এ জিনিষটার অভাব ছিল । অর্থাৎ এমন কোন দিক ছিলনা, যে দিক থেকে আল্লাহ পাক রাসুল (সা:) কে পরিপূর্ন করেননি।
রসূল (সা:) এর বংশ মর্যাদাঃ- আল্লাহ তায়ালা রাসূল (সা:)কে এমন বংশে প্রেরন করেছেন যে, তার চেয়ে শ্রেষ্ট বংশ হতে পারেনা। হুজুর (সা:) বলেন আদম (আ:) থেকে শুরু করে আমি পর্যন্ত আমার বংশ বিবাহের মাধ্যমে সবকিছু সম্পন্ন হয়েছে। এতে যিনার কোন গন্ধ ও নেই। 
বুখারী শরিফে কিতাবুল অহীতে হাদিসে ’হিরাকাল”নামে একটি হাদিসের উল্লেখ রয়েছে। দীর্ঘ এই হাদিসে হিরাকল রাসুল (সা:) এর বংশ সম্পর্কে জানার জন্য আবু সুফিয়ানকে অনেক গুলো প্রশ্ন করেছেন। তার মধ্যে একটি প্রশ্ন ছিল মোহাম্মদ (সা:) এর বংশ কেমন ছিল? আবু সুফিয়ান রাসূল(সা:)এর তৎকালীন দুশমন হওয়াসত্বে ও বলল, সে আমাদের মাঝে শ্রেষ্ট ও উত্তম বংশের।
রাসূল (সা:) এর সৌন্দর্য়ঃ- আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় হাবীব মোহাম্মদ (সা:) কে যেমনিভাবে চারিত্রিক সৌন্দর্যে ভরে দিয়েছিলেন তেমনিভাবে তার চেহারাতে ও অনুপম সৌন্দর্যের মাধুরী ঢেলে দিয়েছিলেন। আল্লাহ তায়ালা রাসূল (সা:) কে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট সুন্দর আকৃতিতে দুনিয়াতেপ্রেরন করেছেন। রাসূল (সা:) কেমন সুন্দর ছিলেন তা এই হাদিসেই বিদ্যমান। সহীহ রেওয়াতে এসেছে, একদা রাসূল (সা:) মসজিদে নববীতে সাহাবাদের উদ্দেশ্যে নসীহত পেশরত ছিলেন। পূর্নিমার রাত, চাঁদের আলোয় মসজিদেনববীর আঙ্গিনা ঝলমল করছে। বিশিষ্ট সাহাবী হযরত জাবের ইবনে সামুরাহ (রা:) মসজিদেনববীর বারান্দায় এসে দাড়িয়ে রইলেন। হুজুর (সা:) বললেন, তুমি বসছোনা কেন? সে জবাবে বললেন, হুজুর আমি পূর্নিমা রাতের চাঁদকে দেখছি আর আপনার চেহারা মুবারক দেখছি। আল্লাহর কসম ! আপনার চেহারা পূর্নিমা রাতের চাঁদ থেকেহাজারো গুন বেশী সুন্দর । উম্মাহাতুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা:) হুজুর (সা:) সর্ম্পকে বলেন, আমার একটি সূর্য আছে , আকাশের ও একটি সূর্য আছে। কিন্তু আকাশের সূর্যের চেয়ে আমার সূর্য অনেক বেশী সমুজ্জল । কারন আকাশের সূর্য উদিত হয় ফজরের পর আর আমার সূর্যদীপ্তিমান হয় এশার পর থেকে । অন্য এক প্রসঙ্গে হযরত আয়েশা (রা:) বলেন, আমার সূর্যের আলো এত বেশী প্রষ্ফুটিত হয় যে, রাতের অন্ধকারে ও যদি আমার সুই হারিয়ে যায় তাহলে ও আমার বাতি জ্বালানোর প্রয়োজন হয়না । হুজুর (সা:)এর সৌন্দর্যের তাজাল্লীতেই আমি আমার সুই খুঁজে পাই। কোন সমস্যা হয়না।
রাসূল(সা:) এর মুহাব্বতই নাজাতের কারন হবেঃ-রাসূল (সা:) এর প্রতি যদি অন্তরে ভালবাসা থাকে তাহলে কিয়ামতের দিন তার সাথে ই হাশর হবে। বুখারী শরীফের এক হাদিসে রয়েছে যে, এক সাহাবী রাসূল (সা:) এর নিকট এসে প্রশ্ন করলেন যে, হে আল্লাহর রাসূল !কিয়ামত কবে হবে ? রাসূল (সা:) তাকে পাল্টা প্রশ্ন করলেন কিয়ামত কবে হবে জিজ্ঞাসা করছ? তুমি কিয়ামতের জন্য কি প্রস্তুতী গ্রহন করেছ? সে বলল ইয়া রাসূল্লাহ ! নফল নামাজ রোজা তেমন বেশী একটা আমারনেই তবে আমি আপনাকে মুহাব্বত করি । হুজুর (সা:) বললেন যে যাকে ভালবাসে তার সাথে তার হাশর হবে। রাসুল (স:) এর জীবন আজও আমাদের মাঝে বিদ্যামান। তার সব কিছু হাদিসের নির্ভর যোগ্য বিশুদ্ধ ছয়টি কিতাব ছাড়া ও অসংখ্য কিতাবে সংরক্ষিত রয়েছে। তাঁর ঘরোয়া জীবন থেকে শুরু করে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয় গুলো ও আমাদের মাঝে দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট । এক ফার্সীকবি তার কবিতায় এরই কিঞ্চত আভাস দিয়ে বলেন যার মর্মার্থ এই,মোহাম্মদ (সা:) এর শির মুবারক থেকে পা পর্যন্ত যেদিকে দৃষ্টি বুলাই সে দিকেই আমার অন্তর অকর্ষিত হয় মন বলে আমার বঞ্চিত বস্তু এখানেই আছে। 
মোট কথা রাসুলে কারীম (সা:) ছিলেন সুন্দরের মূর্ত প্রতিক। তার জীবনের কোন একটি দিক এমন ছিলনা যাতে সামান্যতম অসুন্দর পাওয়া যায়। দুনিয়াতে উম্মতের কল্যাণের জন্য তিনি ছিলেন সৌন্দর্যের প্রত্যাশী। উম্মতের আমলকে সুন্দর করার জন্য তার ত্যাগ তিতিক্ষা প্রশ্নাতীত ব্যাপার। আল্লাহ তায়ালা আমাদের মাঝে রাসুল (সা:) এর আর্দশ গ্রহন করে সুন্দর মানুষ হওয়ার তৌফিক দান করুন । আমিন।

লেখক: মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান,সিনিয়র শিক্ষক: জামিয়া কোরআনিয়া সৈয়দা সৈয়দুন্নেছা ও কারিগরি শিক্ষালয়, কাজীপাড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com